বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের আলোচনার পর্ব, এবং এই প্রথম বৈঠকে বিএনপিকে রাখা হয়েছে। বেলা আড়াইটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই সংলাপ, যেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে, মির্জা ফখরুল ছাড়াও বিএনপির প্রতিনিধিদলে কারা থাকবেন, তা এখনও নিশ্চিত হয়নি; দলীয় সূত্রে জানা গেছে যে, আজ বা আগামীকালের মধ্যে তা চূড়ান্ত করা হবে।
বিএনপির পাশাপাশি, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেও সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাদেরও এদিন আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) আজ সকালে অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টার মাধ্যমে বৈঠকের আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
রুহিন হোসেন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আগামী শনিবার বিকেল চারটায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম গত বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় ফিরে আসছেন। বৈঠকে উপদেষ্টারাও উপস্থিত থাকবেন।
গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে ইতোমধ্যে দুই দফায় উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার থেকে আবারও নতুন দফায় আলোচনা শুরু হবে, যেখানে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ছয় সংস্কার কমিশনের কাজের অগ্রগতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।
শফিকুল আলম আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সংস্কার কমিশন গঠিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান এবং দুর্নীতি দমন বিষয়ক সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক আলী রীয়াজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।