গণতন্ত্রকামী মানুষ ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থান হতে দেয়নি”: রিজভীর বক্তব্য

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মন্তব্য করেছেন, “পৃথিবীর কোথাও ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থান হয় না।” তিনি বলেন, “ইতালি, জার্মানি এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থানে গণতন্ত্রকামী মানুষ ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থান হতে দেয়নি।”

গত ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রেক্ষাপটে তিনি এই মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে অভ্যুত্থানে নিহত দুই ব্যক্তির পরিবারের কাছে আর্থিক সহায়তা প্রদান করার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থান ঘটলে আন্দোলনকারী যাঁরা চোখ হারিয়েছেন কিংবা পঙ্গু হয়ে আছেন, তাঁদেরও নির্বিচার হত্যা করা হবে।” গত ১৫ বছরে যারা গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন, তাদের এবং তাদের পরিবারের ওপর শেখ হাসিনার প্রাণঘাতী কর্মসূচির প্রভাব পড়বে। এ সময় তিনি গণ-অভ্যুত্থানে নিহত তাহমিদ ও মাসুদ রানার ঘটনার কথা উল্লেখ করেন।

এর আগে রিজভী মিরপুর-২ নম্বরে তাহমিদ ও মাসুদ রানার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি জানান, “এই পরিবারগুলো ছিল তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। মাসুদ রানার আয় দিয়ে তার পরিবার চলত। এখন তাঁর স্ত্রী অসহায়, আর তাঁর শিশু কন্যা আর্তনাদ করছে। তাহমিদ যদি এমএ পাস করতেন, তাহলে চাকরি পেতেন। কত স্বপ্ন নিয়ে তারা লেখাপড়া করেছেন। তারা তো নিজের জীবন দিয়ে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। এই সংগ্রাম যেন ব্যর্থ না হয় এবং এ পরিবারগুলো যেন না খেয়ে থাকে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, “যেসব পরিবারের শহীদ হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে যে-ই থাকুক, তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরি প্রদান করা উচিত। এটি খুব জরুরি।”

শেখ হাসিনা সরকারের লুটপাটের বিষয়ে তিনি বলেন, “সমবায় ব্যাংকে গ্রাহকদের জমা রাখা ৭৩৯৮ ভরি সোনা আওয়ামী লীগের নেতা মহিউদ্দিন আহমেদের মাধ্যমে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।” তিনি দাবি করেন, “শেখ হাসিনা তো প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন একটি দস্যু ও মাফিয়া সিন্ডিকেটের প্রধান। অনাচার, অবিচার ও লুটপাটের লাইসেন্স তিনি দলের নেতা ও অনুগতদের দিয়ে দিয়েছেন।”

এ সময় রিজভী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় নিহত দুই শহীদের পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নেতা মুন্সী বজলুল বাছিত, আতিকুর রহমানসহ অন্যান্য নেতারা।