ভালোবাসা উপলব্ধির বিষয়, ডিগ্রির নয়: অভিনেতা কচি খন্দকারের জীবনদর্শন

অভিনেতা কচি খন্দকারের কাছে বয়স কেবল একটা সংখ্যা। তবে জীবনবোধ ও দায়বদ্ধতা তাকে সবসময় ভাবায়। আজ তার ৬১তম জন্মদিন। এই বিশেষ দিনে তিনি বললেন, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তিনি চেষ্টা করেছেন সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠার। আর এই মানুষ হয়ে ওঠার মধ্যেই নিহিত আছে সমাজের সংকট দূর করার পথ।

কচি খন্দকার বলেন, “জীবনের এতগুলো বছর পেরিয়ে এসে আমি চেষ্টা করেছি একজন ভালো মানুষ হওয়ার। আমাদের সবাইকেই প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে হবে। কিন্তু এখানেই আমাদের বাধা, আমরা কতটা মানবিক হতে পারছি? একজন মানুষ যদি প্রকৃত অর্থে মানুষ হয়ে উঠতে পারে, তার ভেতর দায়িত্ববোধ জন্ম নেয়। আর এই দায়িত্ববোধই আমাদের সমাজের সংকটগুলো দূর করতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “মানুষ হয়ে ওঠার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো উচ্চাকাঙ্ক্ষা। যা আমাদের মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দেয়। উচ্চাকাঙ্ক্ষা মানুষকে ভালোবাসা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, দায়বদ্ধতা থেকে সরিয়ে দেয়। তবে ভালোবাসা লালন করতে কোনো ডিগ্রির প্রয়োজন নেই, এটি সম্পূর্ণ উপলব্ধির বিষয়।”

কচি খন্দকারের শিল্পজীবন দীর্ঘ। নাটক, অভিনয় ও পরিচালনায় তার সাফল্য অগণিত। তার কাজগুলোতে সবসময়ই মানবিকতা এবং সমাজের নানা অসঙ্গতি উঠে এসেছে। তিনি বলেন, “আমি যে কনটেন্টগুলো লিখেছি বা তৈরি করেছি, সেগুলো একদমই মৌলিক। এই গল্পগুলো আর কারও সঙ্গে মিলে না। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় আমি হয়তো কিছুটা সফল হয়েছি।”

১৯৬৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করা এই অভিনেতা দর্শকদের কাছে এখনো তরুণ হিসেবে পরিচিত। তিনি বলেন, “দর্শক আমাকে এখনো কচি ভাই বলে ডাকে। অনেকে জোর করেই আমাকে আগেই বাবার চরিত্রে অভিনয় করিয়েছেন। প্রথম ‘ব্যাচেলর’ নাটকে আমি বাবার চরিত্রে অভিনয় করি, যদিও তখনো তরুণ ছিলাম।”

মঞ্চ থেকে টেলিভিশন পর্যন্ত তার কর্মজীবন সমৃদ্ধ। মঞ্চে তার পথচলা শুরু হয় ১৯৭৯ সালে। সেই সময় থেকেই নাটক লেখা ও নির্দেশনায় তার পদচারণা। তার থিয়েটারের নাম ছিল অনন্যা নাট্যদল। কচি খন্দকার সবসময়ই নিজেকে একজন নির্মাতা হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। যদিও চরিত্রের বৈচিত্র্য না পাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে অভিনয় কমিয়ে দিয়েছেন।

তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘কবি’, ‘ক্যারাম’, ‘ভূগোল’, ‘এফডিসি’।