এফডিসিতে দ্বন্দ্বের নতুন অধ্যায়: পাল্টাপাল্টি সংগঠনের উন্মোচন!

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মুখোমুখি। গতকাল বুধবার সন্ধ্যার দিকে এফডিসির চারপাশে জমজমাট পরিবেশ দেখা যায়, যেখানে শিল্পী সমিতির অফিসের পাশেই ছিল জনসমাবেশ। পরিচালক সমিতির অফিসে উপস্থিত ছিল অনেক মানুষ, এবং মূল প্রশাসনিক ভবনের সামনে জমায়েত হয়েছিল একঝাঁক প্রযোজক, অভিনয়শিল্পী, সাংবাদিক এবং বহিরাগতরাও।

প্রথম দেখায় মনে হতে পারে, এফডিসি সিনেমার প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পাচ্ছে। তবে বাস্তবতা কিছুটা ভিন্ন। জুলাই মাস থেকে তিন মাসের মধ্যে এখানে শুটিং হয়নি, যা চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য চ্যালেঞ্জের বিষয়। এই পরিস্থিতিতে এফডিসির সমিতিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা বেড়ে গেছে।

গতকাল নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে, যার নাম “বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন ফোরাম।” এর আগে আগস্টে গঠিত হয়েছিল ‘বৈষম্যবিরোধী চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটি।’ নতুন সংগঠন নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে, কেন এতো সংগঠনের দরকার হলো?

৫ আগস্টের সরকার পতনের পর এফডিসিতে কার্যক্রম থমকে গেছে। এদিকে, প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীরা নিজেদের নতুন রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরার জন্য সমিতির সংস্কারের কথা বলছেন।

এফডিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা হিমাদ্রি বড়ুয়া জানান, একই জায়গায় সংবাদ সম্মেলন করার পরিকল্পনা ছিল দুটি দলের, যা বিতর্ক এড়াতে অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন ফোরামের আহ্বায়ক প্রযোজক সামসুল আলম বলেন, “এটি একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। চলচ্চিত্রের স্বার্থে সবার সঙ্গে কাজ করতে চাই।”

অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির প্রধান পরিচালক বদিউল আলম জানান, “আমরা চলচ্চিত্রের উন্নয়ন চাই। সবাইকে নিয়ে কাজ করার জন্য আমাদের প্রস্তুতি আছে।”

এফডিসির মধ্যে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এফডিসিতে রাজনৈতিক বিভক্তি এবং স্বার্থপরতার সুযোগ নেওয়া হচ্ছে, যা চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য হুমকি।

এখন দেখা হবে, এই নতুন সংগঠনগুলি কিভাবে চলচ্চিত্র শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং কি করে নিজেদের উদ্দেশ্য সাধনে সফল হয়।