ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট অ্যাকশন ফোরাম’ সম্মেলনে বক্তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা একটি সমস্যা নয়, বরং ব্যবসার জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখন বাস্তবতা এবং এটি কেবল একটি কমপ্লায়েন্স ইস্যু হিসেবে নয়, বরং একটি ব্যবসায়িক কৌশলগত সমস্যা হিসেবে দেখা উচিত। এই নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবসাকে প্রতিযোগিতামূলকভাবে উন্নীত করার সম্ভাবনা রয়েছে।
সম্মেলনটি বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই) এর উদ্যোগে এবং ঢাকার রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে আয়োজিত হয়। এতে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তা, সরকারি প্রতিনিধি, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, বিদেশি ফ্যাশন ব্র্যান্ড এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর চারশোরও বেশি প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ প্রয়োজন। তিনি বলেন, বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীরা এখন নতুন সুযোগ উন্মোচন করছে, যা ব্যবসাকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে পারে। তিনি আরও বলেন, “নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের পরিমাণ আমাদের এখনো ২ শতাংশ, যা বাড়াতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, পণ্য উৎপাদনের প্রক্রিয়া উদ্যোক্তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এবং কম খরচে উৎপাদন করা প্রধান বিবেচ্য বিষয় নয়।
ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টারও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে সহযোগিতার গুরুত্বের উপর জোর দেন।
বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা একটি বোঝা নয়, বরং এটি উদ্যোক্তাদের জন্য একটি সুযোগ।” তিনি আরও যোগ করেন, সস্তা শ্রম বাংলাদেশের জন্য আর প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা নয়, এবং লক্ষ্য অর্জনে উৎপাদনকারীদের আরও দায়িত্ব নিতে হবে।
সম্মেলনে ৪০ জন দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ প্যানেল আলোচনা ও কর্মশালায় অংশ নেন এবং তারা জলবায়ু স্থিতিস্থাপক ও কার্বন-নিরপেক্ষ ভবিষ্যৎ গঠনে সহযোগিতা ও উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তিন শতাধিক প্রকৌশলী অংশ নেন।