নতুন দিনের সূচনা: অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের নতুন যাত্রা

এনপিআর-এর সাথে কথোপকথন: একটি নতুন জাতির স্বপ্ন দেখছেন অধ্যাপক ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তার জীবনের গতিপথ পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের পর, অধ্যাপক ইউনূস ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পতনের পর এই নতুন দায়িত্ব পান।

মার্কিন পাবলিক ব্রডকাস্টিং সংস্থা এনপিআর-এর একটি সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এটি ছিল ঘটনার খুব অদ্ভুত পরিবর্তন।” তিনি উল্লেখ করেন যে, যখন তিনি প্যারিসে ছিলেন, তখন তার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে ছিলেন। তবে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পরে একটি ফোন কল তাকে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেয়।

২০০৬ সালের নোবেল বিজয়ী, ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং দারিদ্র্য মোকাবিলার জন্য ছোট ঋণ প্রকল্পের পথিকৃৎ। তিনি যখন রাজনৈতিক চাপে ছিলেন, তখন বিশ্ব নেতাদের মধ্যে বারাক ওবামা এবং জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন তার সমর্থনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “দেশ পরিচালনায় যুক্ত হওয়া খুবই কঠিন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল। কিন্তু যখন ছাত্ররা আমাকে ডেকে বলল যে তারা জীবন দিতে প্রস্তুত, তখন আমি নিজেকে সেবা করার জন্য প্রস্তুত করলাম।”

মিশেল মার্টিনের সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, “মানুষ মারা যাচ্ছে। প্রায় এক হাজার যুবক জীবন দিয়েছেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল একটি পরিবর্তন আনা।”

ইউনূস আশাবাদী যে, দেশের মানুষের মধ্যে পরিবর্তনের জন্য একটি বিপ্লবী আবহ রয়েছে। তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি যে, আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমরা সঠিক পথে আছি।”

অধ্যাপক ইউনূসের ভাষ্যমতে, “সংস্করণ ২-এর মাধ্যমে আমরা পুরনো পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি করতে চাই না।” তিনি তরুণদের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন এবং তাদের নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণের কথা বলেন।

সাক্ষাৎকারের শেষে, ইউনূস বলেন, “আমি আমার জীবনের শেষ দিকে এসে খুব খুশি হব যদি আমি দেখি আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠিত হচ্ছে।”

এভাবেই অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে, যা বিশ্বের কাছে একটি উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে।