পেটের চর্বির বিপদ: জানুন কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন স্বাস্থ্যঝুঁকির এই নীরব ঘাতক!

পেটের চর্বি যদি কমাতে না পারেন, তাহলে আপনি নিজের জন্য বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনছেন। শরীরের গঠন যেমনই হোক না কেন, বিশেষ করে পেটের চারপাশে চর্বি জমা অত্যন্ত ক্ষতিকর। পেটের চামড়ার নিচে জমা চর্বি, যাকে ‘সাবকিউটেনিয়াস ফ্যাট’ বলা হয়, এবং ভেতরের অঙ্গগুলোর চারপাশে জমা থাকা ‘ভিসেরাল ফ্যাট’, এই দুই ধরনের চর্বিই নানা স্বাস্থ্য সমস্যার জন্ম দেয়।

বিশ্ববিখ্যাত হার্ভার্ড হেলথ পাবলিকেশনের প্রতিবেদনে বস্টনের ‘ব্রিঘাম অ্যান্ড উইম্যান’স হসপিটাল’-এর চিকিৎসক ডা. হাওয়ার্ড ই. লিওয়াইন ব্যাখ্যা করেন, পেটের ভেতরের ভিসেরাল ফ্যাট শরীরে নানা ধরনের হরমোন নিঃসরণ করে, যা আমাদের রক্তের শর্করা, কোলেস্টেরল ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। মধ্য বয়সের পর নারীদের মধ্যে এই ধরনের চর্বি জমা বাড়তে দেখা যায়, এমনকি ওজন না বাড়লেও পেটের মাপ বেড়ে যায়।

পেটের চর্বি থেকে সম্ভাব্য রোগ:
১. হৃদরোগ: কোমরের মাপ বেশি হলে হৃদরোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
২. স্মৃতিভ্রংশ: অতিরিক্ত পেটের চর্বি ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগের ঝুঁকি তিনগুণ বাড়ায়।
৩. শ্বাসকষ্ট: বড় কোমর মানে শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমার ঝুঁকি ৩৭ শতাংশ বেশি।
৪. স্তন ক্যান্সার: রজঃবন্ধের আগে ও পরে, পেটের চর্বি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
৫. মলাশয়ের ক্যান্সার: ভিসেরাল ফ্যাট বেশি থাকলে মলাশয়ের ক্যান্সারের সম্ভাবনা তিনগুণ বেশি।

কীভাবে কমাবেন পেটের চর্বি?
পেটের চর্বি কমানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস। প্রতিদিন ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটা বা সাইকেল চালানো চর্বি কমাতে সহায়ক। এছাড়াও, সুষম খাদ্যগ্রহণ, ধূমপান বন্ধ রাখা, এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা—এগুলো সবই চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

বিপদজনক এই পেটের চর্বি কমাতে দ্রুত কোনও পন্থা অবলম্বন না করে নিয়মিত সঠিকভাবে জীবনযাপন করলে আপনি দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পারবেন।