শ্রীলঙ্কা তাদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা জয় দিয়ে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে। শ্রীলঙ্কার দুই স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়া ও নিশান পেইরিসের অসাধারণ ঘূর্ণিতে, সিরিজের দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্টের চতুর্থ দিনেই স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৫৪ রানে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে। এটি ইনিংস ব্যবধানে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় জয় এবং প্রায় ছয় বছর পর নিউজিল্যান্ড ইনিংস ব্যবধানে হারল। সর্বশেষ ২০১৮ সালে পাকিস্তানের কাছে তারা এমন পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিল।
গল টেস্টের তৃতীয় দিন শেষেই শ্রীলঙ্কা জয় নিশ্চিত করার পথ তৈরি করে রেখেছিল, তখন কিউইরা ৫ উইকেটে ১৯৯ রান করে ইনিংস হার এড়াতে আরও ৩১৫ রান প্রয়োজন ছিল। তবে চতুর্থ দিনের শুরুতেই টম ব্লান্ডেল হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর প্রবাথ পেইরিসের শিকারে পরিণত হন। তিনি ৬০ রান করেন ৬৪ বলে, গ্লেন ফিলিপসের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৯৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন।
ফিলিপসও নিজের ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও পেইরিসের শিকার হন, ৭৮ রান করে। এরপর মিচেল স্যান্টনার দলের লোয়ার অর্ডারের ব্যাটারদের সঙ্গে থেকে হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করেন। তবে জয়সুরিয়া এবং পেইরিসের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস ৩৬০ রানে থেমে যায়। স্যান্টনার ৬৭ রান করেন। পেইরিস অভিষেক টেস্টেই ১৭০ রানে ৬ উইকেট এবং জয়সুরিয়া ১৩৯ রানে ৩ উইকেট নেন। সিরিজে ১৮ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হন জয়সুরিয়া, আর ম্যাচ সেরা হন কামিন্দু মেন্ডিস, যিনি প্রথম ইনিংসে ১৮২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
প্রথম টেস্টে ৬৩ রানে জেতার পর দ্বিতীয় টেস্টেও জয় তুলে নিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল শ্রীলঙ্কা। এর আগে ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল তারা। এ বছর টেস্টে আট ম্যাচের মধ্যে এটি ছিল শ্রীলঙ্কার ষষ্ঠ জয়। ২০০৬ সালের পর এক বছরে তারা আবারও ছয়টি টেস্ট জয় করল। তাদের টেস্ট ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ আটটি ম্যাচ জয়ের রেকর্ডও রয়েছে।
এই জয় শ্রীলঙ্কাকে বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে নিয়ে যায়। ৯ ম্যাচে ৫ জয় ও ৪ হারের মাধ্যমে তাদের পয়েন্ট শতাংশ এখন ৫৫.৫৬। অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ড ৮ ম্যাচে ৩ জয় ও ৫ হারে ৩৭.৫০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থান থেকে সপ্তম স্থানে নেমে গেছে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে ভারত (৭১.৬৭ শতাংশ), দ্বিতীয় স্থানে অস্ট্রেলিয়া (৬২.৫০ শতাংশ) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ (৩৯.২৯ শতাংশ)।