বার্সেলোনায় ‘জীবন্ত’ হয়ে উঠলেন ম্যারাডোনা: একটি ত্রিমাত্রিক প্রদর্শনীর যাত্রা

স্পেনের বার্সেলোনায় ‘ডিয়েগো লিভস’ নামক একটি বিশেষ ত্রিমাত্রিক প্রদর্শনীতে জীবন্ত হয়ে উঠেছেন ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা! প্রায় চার বছর আগে অন্যলোকে চলে যাওয়া এই কিংবদন্তির জীবনকে স্মরণ করতে তৈরি করা হয়েছে এই প্রদর্শনী, যেখানে ম্যারাডোনার হলোগ্রাম এবং তাঁর শৈশবের বাড়ির একটি জীবন্ত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এই প্রদর্শনীতে ম্যারাডোনার ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী স্মৃতির পুনরাবৃত্তি ঘটে। তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে চিত্রিত হয়েছে নেপলস এবং তেল আবিবের পর এবার বার্সেলোনার ইতিহাসের পাতায়। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত বার্সেলোনায় খেলেছিলেন ম্যারাডোনা, যদিও এই সময়ে তাঁর ক্যারিয়ার বেশ সুখকর ছিল না; ইনজুরি ও মানসিক চাপের কারণে।

বার্সেলোনার কেন্দ্রস্থলে ২,০০০ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে আয়োজিত এই প্রদর্শনীর আকর্ষণীয় দিক হলো ভক্তরা ম্যারাডোনার মতো পেনাল্টি কিক নিতে পারবেন। সেইসাথে, ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিখ্যাত ‘হ্যান্ড অফ গড’ গোলের পুনরাবৃত্তিতে ছবি তোলার সুযোগও পাবেন। প্রদর্শনীর অন্যতম আয়োজক আভেলিনো তামারগো এএফপিকে জানান, “এখানে মনে হবে ম্যারাডোনা আপনার পাশেই দাঁড়িয়ে। তাঁকে অনুভব করতেই এই আয়োজন।”

ম্যারাডোনার আত্মীয়-স্বজনদের অনুমতি নিয়েই আয়োজনটি করা হয়েছে। কোকেন ও মদ্যপানের দীর্ঘদিনের সমস্যার কারণে ২০২০ সালের নভেম্বরে ৬০ বছর বয়সে মারা যান এই কিংবদন্তি। অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে বুয়েনস আইরেসের একটি বাসায় রাখা হয়েছিল, কিন্তু দুই সপ্তাহ পরেই তাঁকে বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

প্রদর্শনীতে ম্যারাডোনার জীবনের বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিও দেখানো হচ্ছে, যেখানে তাঁর শৈশবের বাড়ি ভিলা ফিওরিতোর চিত্রও রয়েছে। তামারগো আরও বলেন, “ম্যারাডোনা আমার শৈশবের নায়ক। আমাদের প্রজন্মের নায়ক।”

অক্টোবরের শুরুতে, আর্জেন্টিনার আদালত ম্যারাডোনার দেহাবশেষ কবরস্থান থেকে সরানোর অনুমতি দেয়। বুয়েনস এইরেসের কেন্দ্রস্থলে একটি সমাধিস্তম্ভ তৈরি করে তাঁর দেহাবশেষ স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়, যা তাঁর কন্যাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে করা হয়েছে।

বার্সেলোনার এই প্রদর্শনী আগামী দুই মাস ধরে চলবে, যেখানে ম্যারাডোনার জীবন, তার অর্জন এবং ফুটবল জগতে অবদান নিয়ে একটি অনন্য অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করা হবে।