গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে অনেক সুবিধাভোগী প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী অংশগ্রহণ না করলে এই আন্দোলন সফল হতো না।
শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে পেশাজীবীদের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়।
নুরুল হক আরও বলেন, বর্তমান সরকারের ভেতর সুবিধাবাদীরা ঢুকে গেছে, এবং এই এনজিও মার্কা সরকার নিয়ে খুব বেশি দূর এগোনো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পতনের আন্দোলন একদিনে হয়নি; এর পটভূমি অনেক বছর ধরে তৈরি হয়েছে। ২০১৮ সালের আন্দোলন না হলে ২০২৪ সালের আন্দোলনের সম্ভাবনা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন।
আন্দোলনে বিএনপি এবং জামায়াতের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমাদের ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্যরা আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিলেন, কিন্তু আমরা নিজেদের মাস্টারমাইন্ড দাবি করতে পারি না। বিএনপি ও জামায়াতের অংশগ্রহণ ছাড়া আন্দোলন সফল হতো না।”
নুরুল হক আরও বলেন, হঠাৎ করে নির্বাচন দিলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। মানুষের অনেক ক্ষুধা রয়েছে এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আস্থা থাকলেও আশঙ্কা রয়েছে তাঁর চারপাশের মানুষের নিয়ে। তিনি দাবি করেন, দেশের সংস্কার করতে হবে এবং দ্ব chambers বিশিষ্ট ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা চালু করতে হবে।
পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নুরুল বলেন, ভারত পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন, বিশেষ করে আসন্ন দুর্গাপূজার প্রেক্ষিতে, যাতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নিরাপদে পূজা পালন করতে পারেন।
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ছাড়া রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব নয়। তিনি উল্লেখ করেন, শপথের ৫০ দিন পার হলেও সরকার এখনও কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি, আর এতে আবার একটি ১/১১ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসির উদ্দীন বলেন, এখন বলা হচ্ছে যে রাজনৈতিক দল এবং জনগণের ভূমিকা অস্বীকার করা হচ্ছে, কিন্তু আসলে সবাই এই আন্দোলনে যুক্ত ছিল।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ জানান, ৬টি সংস্কার কমিটি হলেও এখনও গণমাধ্যম সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়নি, এবং ফ্যাসিবাদের দোসরেরা এখনও গণমাধ্যমগুলোতে রয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সভাপতি জাফর মাহমুদ, এবং সঞ্চালনা করেন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খালিদ হাসান। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লতিফ মাসুম, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এরশাদুল বারী মামুন, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম এবং সাংবাদিক পার্থ সারথি দাস।