আবদুল জব্বার, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার এক তরুণ কৃষক, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই সবজি চাষ করে বছরে ৭ লাখ টাকার আয় করছেন। ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে যুক্ত ছিলেন তিনি, আর সেখান থেকেই শুরু হয় তার কৃষির প্রতি ভালোবাসা। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই নিজে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বর্গা জমিতে সবজি চাষ শুরু করেন।
২০১৬ সালে ব্যাংক থেকে এবং বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে শুরু করেন সবজি চাষ। প্রথম বছরেই তিনি প্রায় ৯ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করেন। এরপর থেকে তার লাভ বেড়েই চলেছে। প্রথমে পেঁপে, কচু, বেগুন, মরিচ, আলু, শিমসহ নানা ধরনের সবজি চাষ করলেও, এখন সারাবছর জুড়েই তার জমিতে ১০ প্রজাতির সবজি চাষ হয়।
আবদুল জব্বার রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে গোবর ও কম্পোস্ট সার ব্যবহার করেন এবং কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করেন। তিনি হলুদ আঠালো ফাঁদ ও ফেরমোন ট্র্যাপ দিয়ে তার ফসল রক্ষা করেন। এই কৌশলের ফলে তার সবজি বিষমুক্ত থাকে, যা বাজারে অনেক চাহিদা পায়।
২০১৮ সালে একটি কৃষি প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে বিষমুক্ত সবজি চাষের গুরুত্ব বুঝতে পারেন জব্বার। এরপর থেকেই তিনি তার জমিতে রাসায়নিক ছাড়া সবজি চাষ শুরু করেন এবং তার লাভ আরও বেড়ে যায়। ২০১৯ সালে কৃষি থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে তিনি ১৭ লাখ টাকায় একটি ট্রাক্টরও কিনেছেন।
প্রতিদিন ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত নিজের জমিতে কাজ করেন তিনি, যেখানে আরও ৮ জন শ্রমিক তাকে সহযোগিতা করেন। তার উৎপাদিত সবজি পটিয়ার কমলমুন্সির হাটে বিক্রি হয় এবং অনেক সময় পাইকাররা খেত থেকেই সবজি কিনে নিয়ে যান।
পটিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান জানান, আবদুল জব্বার একজন উদ্যমী কৃষক। তার সাফল্য দেখে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছেন কৃষিকাজে। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় তাকে বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণে পাঠানো হয় এবং তার খামার পরিদর্শন করা হয়।