ডিমের বাজারে সিন্ডিকেটের কবলে জনগণ: ২০ দিনে লুট ২৮০ কোটি টাকা!

সারা দেশের ডিমের বাজারে অস্থিতিশীলতা নিয়ে উঠেছে তীব্র অভিযোগ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে একটি ডিমের দাম পৌঁছেছে ১৫ টাকায়, যা ভোক্তা এবং খামারিদের জন্য বিপর্যয়কর। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এই অস্থিতিশীলতার পেছনে বহুজাতিক কোম্পানি এবং রাজধানীর তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এনেছে। তাদের দাবি, গত ২০ দিনে অসাধু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অযৌক্তিকভাবে ডিম ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে প্রায় ২৮০ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিপিএর সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “সরকার ডিম ও মুরগির মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও তাতে প্রান্তিক খামারিদের কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না। কর্পোরেট কোম্পানি এবং ডিম ব্যবসায়ী সমিতি মিলে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ দশমিক ২৯ টাকা হলেও খুচরা বাজারে তা ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদি পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলা যায়, তবে দ্রুতই ডিম-মুরগির বাজার স্বাভাবিক পর্যায়ে আসবে।”

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সিন্ডিকেট প্রথমে খামারিদের থেকে কম দামে ডিম সংগ্রহ করে এবং পরে ঢাকায় রাতে ডিম সরবরাহ করে। ফজরের নামাজের পর তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি ডিমের দাম নির্ধারণ করে, যা মোবাইল এসএমএস ও ফেসবুকের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এভাবে দাম বাড়িয়ে তারা বেশি দামে ডিম বিক্রি করে দ্বিগুণ লাভ করে নেয়, যার ফলে প্রান্তিক খামারি ও ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সুমন হাওলাদার আরও অভিযোগ করেন, “পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার বাজারে কর্পোরেট কোম্পানিগুলো এতটাই শক্তিশালী যে সরকার উল্টো উৎপাদকের ওপর দাম চাপিয়ে দেয়। এভাবে, কর্পোরেট কোম্পানিগুলো ফিড ও বাচ্চার দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে প্রান্তিক খামারিদের কাছ থেকে ১২০ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে।”

তিনি সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সরকারের শক্তিশালী তদারকি ছাড়া এই সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব নয়। উপযুক্ত দামে ডিম-মুরগির সরবরাহ নিশ্চিত করতে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে।”