১৯৪৬ সালে হাতীবান্ধা উপজেলায় এসএস উচ্চ বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়, যা ১৯৪৯ সালে সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে। ২০০০ সালে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে এই প্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল শাখা চালু করা হয়। এরপর, ২০০২ সালে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক নুরুজ্জামান আহমেদ এই বিদ্যালয়ের জমি ও ভবন দেখিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক বিএমটি শাখা চালু করেন। একই সময়ে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে হাতীবান্ধা এসএস হাই স্কুল অ্যান্ড টেকনিক্যাল কলেজ করা হলেও, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এর কোনো নথি পাঠানো হয়নি। ফলে, মন্ত্রণালয়ে এটি এখনও হাতীবান্ধা এসএস উচ্চ বিদ্যালয় নামেই পরিচিত।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এই প্রতিষ্ঠানটি হাতীবান্ধা এসএস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়, তবে বিএমটি শাখাটি বাদ পড়ে। বিএমটি শাখাটি ২০০৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুটি ট্রেডে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদানের অনুমতি পায়। কিন্তু, প্রভাষক পদে নিয়োগ নিয়ে শুরু হয় অনিয়ম। ১৯৯৬ সালের নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর হওয়া উচিত হলেও, ৩১ বছরের শফিকুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়। শফিকুল আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থানের কারণে এখনও পদে বহাল রয়েছেন।
২০১৩ সালের ৩১ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির ওপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষণ বিভাগ অডিট পরিচালনা করে এবং ৬ জন প্রভাষকের সনদ জাল বলে আপত্তি জানায়। তাদের মধ্যে ছিলেন প্রধান শিক্ষকের ছেলে রাশেদুল ইসলাম, আবু বক্কর সিদ্দিক, এবং এম এ খালেক। তবারক হোসেন, আব্দুল হাকিম এবং কেশরুজ্জামানের সনদও জাল বলে দাবি করা হয়। কিন্তু এতকিছুর পরও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
১০ বছর পার হলেও অডিট আপত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো সমাধান হয়নি। বরং প্রতিষ্ঠানটির বিএমটি শাখা জাতীয়করণের জন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ চলছে। সম্প্রতি ক্ষমতায় পরিবর্তন আসার পর এসব অনিয়মের কথা আবার সামনে এসেছে।
প্রভাষক শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, নিয়োগের সময় তার বয়স নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না এবং তিনি আরও দুই বছর আগে থেকেই পাঠদান করছিলেন। ল্যাব অ্যাসিসটেন্ট আব্দুল হাকিম এবং প্রভাষক তবারক হোসেনও নিজেদের সনদ নিয়ে অডিট আপত্তির বিষয় অস্বীকার করেছেন।
এসব অনিয়ম নিয়ে হাতীবান্ধা এসএম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, বিদ্যালয়ের বিএমটি শাখায় অনেক অনিয়ম রয়েছে এবং এখন অরাজনৈতিক সরকার থাকায় তিনি সঠিক পদক্ষেপের আশা করছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি ২০১৩ সালের অডিট আপত্তির বিষয়ে অবগত নন, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।