সুন্দর বিশ্বের জন্য তরুণদের প্রতি বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন ড. ইউনূস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, টেকসই উন্নয়ন এবং একটি সুন্দর বিশ্ব গড়তে তাদের দেশের তরুণদের পেছনে বিনিয়োগ করতে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে তাঁর বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, দারিদ্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈষম্যের মতো বড় বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের তরুণরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এই উদ্দেশ্যে, তরুণদের ক্ষমতায়ন করে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থিতিশীল বিশ্ব গড়ার জন্য তাদের দক্ষতা কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, জুলাই-অগাস্ট মাসে বাংলাদেশের যে ঐতিহাসিক পরিবর্তন হয়েছে, তার কারণেই তিনি জাতিসংঘের সভায় ভাষণ দিতে সক্ষম হয়েছেন। জনগণের শক্তি, বিশেষ করে যুবসমাজ, বাংলাদেশকে স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসনের হাত থেকে রক্ষা করেছে। যুব নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাজনৈতিক সচেতনতার নতুন এক যুগে প্রবেশ করেছে।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এই পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে, তবে তরুণদের দৃঢ় সংকল্প দেশের সমান ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করছে।

তিনি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় রাখার এবং সব নাগরিকের মানবাধিকার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, তাঁর দেশ শান্তি, উন্নয়ন ও অধিকারের প্রতি অঙ্গীকার বজায় রাখবে। স্বাধীনতা এবং মর্যাদার নীতিগুলি বাংলাদেশের সরকার এবং এর আন্তর্জাতিক অবস্থানের কেন্দ্রবিন্দু।

বাংলাদেশের মানুষ অসামান্য সাহসিকতার সাথে স্বাধীনতা ও তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছে, এবং তরুণরা আজ ন্যায়বিচার, সাম্য ও ভবিষ্যতে তাদের ভূমিকার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা উচিত, যেখানে তারা বেড়ে উঠতে পারে, উদ্ভাবন করতে পারে এবং নেতৃত্ব দিতে পারে।

তারুণ্যের ক্ষমতায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সমসাময়িক সমস্যা সমাধানের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণে তরুণদের অর্থপূর্ণ এবং জোরালো অংশগ্রহণ প্রয়োজন।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা থেকে যে শিক্ষা নেওয়া হয়েছে, তা এখনও দেশের তরুণদের কর্ম ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে বাংলাদেশের তরুণরা তাদের মূল্যবোধ ধরে রেখেছে। তারা প্রমাণ করেছেন যে স্বাধীনতা, মর্যাদা এবং বৈষম্য ছাড়া সকল মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখা কেবল উচ্চাকাঙ্ক্ষা নয়; এটি পদ-ভেদাভেদ নির্বিশেষে সবার প্রাপ্য।