ঐক্যবদ্ধ হলে কেউ বিভেদ ছড়াতে পারবে না: ক্যালিগ্রাফি আর্টিস্ট মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ

হেডলাইন: “ঐক্যবদ্ধ হলে কেউ বিভেদ ছড়াতে পারবে না: ক্যালিগ্রাফি আর্টিস্ট মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ”

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী শক্তি হলো ঐক্য। ঐক্যের বিপরীতে কোনো অশুভ শক্তি দাঁড়াতে পারে না। পিঁপড়া ও মৌমাছির জীবন থেকে আমরা শিখি, ছোট্ট শরীর হলেও তারা তাদের একতাবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে অসাধারণ সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করে। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে, দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ রক্তস্রোতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুন করে আরেকটি স্বাধীনতা অর্জন করেছে।

এই ঐক্যের স্মৃতি ধরে রাখতে, কাঁচপুর ব্রিজের পূর্ব পাশের আন্ডারপাসের দেয়ালে ৬,০০০ বর্গফুটের বিশাল এক ক্যালিগ্রাফি এঁকেছেন মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ। পেশাদার ক্যালিগ্রাফি আর্টিস্ট মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ ২০১২ সালে কুরআনের হাফেজ হন এবং ২০২২ সালে হাদিস পাস করেন। তিনি বর্তমানে ‘শৈল্পিক কওমি আর্ট ফাউন্ডেশন’ এবং ‘আল আহনাফ ক্যালিগ্রাফি অ্যাকাডেমি’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এই ক্যালিগ্রাফি শিল্প দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসা কুড়িয়েছে। মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ মনে করেন, ঐক্যের শক্তি দিয়ে বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন তিনি দেখেন। তিনি ক্যালিগ্রাফি শিল্পকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

একান্ত সাক্ষাৎকারে মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ ফরচুন ট্রিবিউনকে জানান, এই ক্যালিগ্রাফির মূল বার্তা হলো ঐক্য। আরবিতে লেখা “আল কুআতু ফিল্ ওয়াহ্দা” অর্থাৎ “একতাই শক্তি”—এই কথাটি তুলে ধরার জন্যই এটি আঁকা হয়েছে। তার ক্যালিগ্রাফির কেন্দ্রে রয়েছে মুষ্টিবদ্ধ হাত, যা মানুষের একতাবদ্ধতাকে প্রতীকীভাবে প্রকাশ করে।

কাঁচপুর ব্রিজের এই মহাসড়কটি চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে ঢাকামুখী। তাই এখানে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে দেশের সংস্কার এবং ঐক্যের বার্তা পৌঁছানোর জন্য এই স্থানটিকে বিশেষভাবে নির্বাচন করেছেন মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ। তিনি বলেন, “স্বাধীনতাকে ধরে রাখার জন্য এবং দেশকে পুনরায় একতাবদ্ধ করার জন্য এখানে একটি মেসেজ দেওয়া হয়েছে।”

১২ জন সদস্যের টিম নিয়ে ১২ দিন অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এই গ্রাফিতি শেষ করেন তারা। মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ আগামীতে আরও বেশি শিল্পী তৈরির স্বপ্ন দেখছেন। তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ক্যালিগ্রাফি এবং গ্রাফিতির ওপরে ফ্রি কোর্স ও কর্মশালা আয়োজন করার পরিকল্পনা করছি।”

এই কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশে আরও বেশি ক্যালিগ্রাফি শিল্পী তৈরি হবে, এমনটাই প্রত্যাশা করেন মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ।