জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির দায় সরকারকে নিতে হবে: রুহুল কবির রিজভী

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “শেখ হাসিনা সিন্ডিকেট করতেন আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে। এখন তো বাজারে সেই সিন্ডিকেট নেই। তাহলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে কেন?” আজ বুধবার রাজধানীর পল্লবীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণসচেতনামূলক প্রচারপত্র বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, “মোটা চাল এবং মাঝারি চাল কেন কেজিতে তিন-চার টাকা বেড়েছে? এখন কেন তেলের দাম লিটারে ৬ টাকা বেড়েছে এবং ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১২ টাকা বেড়েছে?” তিনি অভিযোগ করেন যে, জনগণ সিন্ডিকেটমুক্ত বাজার চায় এবং বাজার মনিটরিং তীব্রতর করার আহ্বান জানান।

এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারে ‘ঢিলেঢালা’ ভাব করছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, “কোথায় যেন ঢিলেঢালা ভাব, এইভাবে চলবে না। আমি শুধু বলে রাখতে চাই, আমরা আন্দোলন থেকে চূড়ান্ত ইস্তফা দিইনি। অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে যদি কারও অশুভ উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে আমরা আন্দোলন–ঝড়ের আর্তনাদ আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) শোনাব।” তিনি দাবি করেন যে, সুষ্ঠু ধারায় গণতান্ত্রিক রাজনীতি এবং দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের সরকার বলে উল্লেখ করেন তিনি। রিজভী বলেন, “এই সরকার যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে গণতন্ত্র ও জনগণ ব্যর্থ হবে। শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিবাদীর যেন প্রত্যাবর্তন না হয়, এটাই জনগণ চায়।”

তিনি জানান, বিএনপি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দল। বিগত ১৬–১৭ বছর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গুম-খুনের শিকার হয়ে অসংখ্য নেতা-কর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। রিজভী আরও বলেন, “জনগণ ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের নামে যদি নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে, তাহলে মানুষ সন্দেহ করবে। গণতন্ত্রের একটি উপাদান হল অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন, যা কেড়ে নিয়েছিল শেখ হাসিনা।”

তিনি অভিযোগ করেন যে, শেখ হাসিনা মাঝে মাঝে তাঁর বক্তব্য ইচ্ছা করে ভাইরাল করেন এবং তাঁর দলের নেতা ও পুলিশ প্রশাসনের কেউ বিদেশে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। রিজভী বলেন, “আর যাঁরা দেশে আছেন, তাঁদের হাতে বিএনপির নেতারাই খুন হচ্ছেন।” তিনি গোপালগঞ্জে দিদার হত্যা এবং নরসিংদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যার মতো ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেন, যা তিনি অশুভ ইঙ্গিত বলে অভিহিত করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুল আলম, আমিনুল হক, তাবিথ আউয়াল, যুবদল নেতা এস এম জাহাঙ্গীর, মেহবুব মাসুম প্রমুখ।