নাটক বা শুটিংয়ের শুটিং সেট কিংবা ঘরোয়া আড্ডা, যেখানে যান, সেখানেই সহকর্মী ও বন্ধুদের কাছ থেকে অভিনেত্রী দীপা খন্দকার একটাই মন্তব্য শুনতে পান—“তোমার তো বয়স বাড়ে না!” কিংবা “তুমি সেই আগের মতোই আছো!” যদিও তিনি জানেন, বয়স যে সত্যিই বেড়েছে, তা প্রমাণিত করার জন্য সম্প্রতি ক্যারিয়ারের শুরুর সময়ের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, “যারা বলেন আমার বয়স বাড়ে না, এটা তাদের জন্য—১৯৯৯-২০২৪।”
সম্প্রতি প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দীপা খন্দকার জানিয়েছেন, অনেকেই মনে করেন তিনি আশির দশকের অভিনেত্রী। এমনকি সেই ধারণার ভিত্তিতে কেউ কেউ মনে করেন, তাঁর বয়সও একটু বেশি হওয়ার কথা। দীপা বলেন, “আমি কিন্তু মোটেই আশির দশকের অভিনয়শিল্পী নই। এই বিষয়টা নিয়ে অনেকেই ভুল করেন। ১৯৯৯ সালে আমি নাটকে অভিনয় শুরু করি। তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ২০ বছর। দেখা যায়, সে সময়ে বেশির ভাগ নারী অভিনয়শিল্পী ২৪-২৫ বছর বয়সে অভিনয় শুরু করতেন, আর পুরুষেরা ৩০। কিন্তু আমার প্রতিষ্ঠা পেতে সময় লাগেনি।”
দীপা ১৯৯৮ সালে বিজ্ঞাপন দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করেন এবং পরবর্তী বছরেই ধারাবাহিক ‘কাকতাড়ুয়া’তে অভিনয় করে ছোট পর্দায় নাম লেখান। প্রথম নাটক থেকেই তিনি সকলের নজরে পড়েন। তিনি বলেন, “শুরুতেই আমি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছি। তাই আমাকে খুব বেশি সংগ্রাম করতে হয়নি। সেই সময় জাহিদ হাসান ও তৌকীর ভাইয়েরা আমাকে অন্যান্য ডিরেক্টরদের কাছে কাস্টিংয়ের জন্য প্রস্তাব করতেন। অল্প সময়েই আমি জনপ্রিয় হয়ে উঠি। এ কারণেই নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে যাঁরা জনপ্রিয় ছিলেন, তাঁদের সমসাময়িক বলে অনেকে আমাকে তুলনা করেন।”
নব্বইয়ের দশকের শেষে এসে দীপা দর্শকদের মন জয় করেন। তিনি জানান, “আমি, রুনা খান এবং বাঁধন কাছাকাছি সময়ে, এক বা দুই বছরের ব্যবধানে ক্যারিয়ার শুরু করেছি। যখন আমাদের তুলনা করা হয়, তখন খুব বেশি পার্থক্য নেই। আমার মনে হয়, আমি সবার ভালোবাসা পেয়েই এত দূর এসেছি। সিনিয়ররা আমার প্রশংসা করেন এবং বলার জন্যই কথা বলেন। হয়তো তাঁদের কাছাকাছি চলে আসার জন্য।”
বর্তমান নাট্যাঙ্গনে কাজের স্থবিরতা নিয়ে দীপা চিন্তিত। তিনি বলেন, “আগের তুলনায় নাটকের কাজ কমেছে। তবে এই মাস থেকে কাজ বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছি।” এদিকে, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নানা সংস্কার নিয়ে অভিনেত্রীরা আলোচনা করছেন। দীপা জানালেন, “আমাদের অভিনয় পেশাকে স্বীকৃতি দেওয়া দরকার। এটা যেন অন্য পেশার মতোই দেখা হয়। আমি প্রতিষ্ঠিত শাখা হিসেবে অভিনয় পেশাকে দেখতে চাই।”
সম্প্রতি দীপা শেষ করেছেন ‘ফ্রেঞ্জি’ ওয়েব সিরিজের শুটিং, যা জাহিদ প্রিতমের পরিচালনায় বিঞ্জে মুক্তি পাবে। পাশাপাশি তিনি নাটকের শুটিংও শেষ করেছেন।