গাজীপুর-আশুলিয়ায় শ্রমিক আন্দোলন থামাতে একত্রিত শ্রমিকনেতারা: সেনাবাহিনীর সহায়তা

গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়ায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান শ্রমিক বিক্ষোভে সমাধানের সন্ধানে একত্রিত হয়েছেন ২০টি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। এ অবস্থায় শ্রমিকদের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য তাঁদের সচেতন করতে উদ্যোগ নিয়েছেন শ্রমিকনেতারা।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গলফ ক্লাবে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অনুরোধে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।

সভায় উপস্থিত বিভিন্ন শ্রমিকনেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা শ্রমিকদের উসকানি না দিতে এবং গুজবে কান না দেওয়ার জন্য শ্রমিকনেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁরা আরও জানান, যদি কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তাহলে সেটি লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে। অপরদিকে, শ্রমিকনেতারা কারখানা থেকে কর্মী ছাঁটাই না করার পাশাপাশি সাময়িক নিয়োগ বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের কাছে একটি সাইনবোর্ড লাগানোর প্রস্তাব দিয়েছেন।

দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই বৈঠকে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, বাংলাদেশ পোশাকশিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তৌহিদুর রহমান, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আকতার এবং গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতারসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিকনেতা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের শেষে ২০টি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা এক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন। সেখানে তারা উল্লেখ করেন যে, শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার পরও আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলের কিছু পোশাক কারখানায় গুজব ছড়ানো হচ্ছে। যৌথ বাহিনী ইতিমধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি আদায়ের জন্য কয়েকজন মালিককে আটক করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তারা দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি হিসেবে পরিচিত পোশাকশিল্পকে গুজব থেকে রক্ষা করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

এদিকে, বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার সাভারের আশুলিয়ায় ১৩টি তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে এবং ৭টি কারখানায় কাজ হয়নি। গাজীপুরের ৪টি কারখানাও বন্ধ রয়েছে।