দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এখনো পুরোপুরি পূরণ হয়নি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন ব্যুরোকে স্বাধীন কমিশনে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এ প্রতিষ্ঠানটি এখনও যথাযথভাবে দাঁড়াতে পারেনি। দুদককে সত্যিকার অর্থে কার্যকর করতে এবং দেশ থেকে দুর্নীতির রাহুগ্রাস মুক্ত করতে হলে এর ভেতরে-বাইরে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন বলে কর্মকর্তারা মনে করছেন। ইতোমধ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দুদকের সংস্কারের লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠন করেছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানকে এই কমিশনের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
দুদক কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে একটি খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করেছেন, যেখানে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের মতে, দুদককে তার সাংবিধানিক মর্যাদা এবং স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস গঠন করতে হবে। পাশাপাশি কমিশনের অভ্যন্তরে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। প্রস্তাবনায় দুদকের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিল বাধ্যতামূলক করা, তাদের কার্যক্রম কঠোরভাবে মনিটরিং করার জন্য পৃথক ইন্টেলিজেন্স সেল গঠনেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়াও, দেশের প্রতিটি জেলায় দুদকের কার্যালয় প্রতিষ্ঠা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট ও ভূমি অফিসের তথ্যের জন্য বিশেষায়িত উইং চালু এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দুদকের ডেস্ক স্থাপন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
দুদক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, “আমরা চাই দুদক শক্তিশালী হোক। আমাদের লক্ষ্য হলো দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠন, যেখানে দুদক কার্যকরভাবে কাজ করবে এবং দেশে উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত হবে।”
এখন সবাই অপেক্ষা করছে সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম শুরুর জন্য এবং দুদককে পুনর্গঠন করার মাধ্যমে এটি সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য।