চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ খাসিফ আল হামুদি এ আগ্রহের কথা জানান। তিনি নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশকে বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চায়। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ থেকে পোশাক, কৃষিপণ্য, ও নিটওয়্যার আমদানি করছে। এবার তারা চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগ করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায়।
বিশ্বের অন্যতম বড় বন্দর পরিচালনাকারী কোম্পানি, দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ড, বর্তমানে ছয় মহাদেশে ৬০টিরও বেশি সমুদ্রবন্দর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত উভয়েই লাভবান হবে বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সবসময়ই বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়। চট্টগ্রাম বন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে এবং বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ।
এ সময় উপদেষ্টা সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে বাংলাদেশি নাবিকদের জন্য দুবাইয়ের ভিসা জটিলতা দূর করার আহ্বান জানান, যাতে তারা সহজে ট্রানজিট ভিসা পেতে পারে।
এছাড়া, পাট ও বস্ত্র খাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে ড. সাখাওয়াত বলেন, পরিবেশবান্ধব ও পচনশীল পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা বিশ্বব্যাপী বাড়ছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ২৮২ ধরণের পাটজাত পণ্য উৎপাদন করছে, যা বৈশ্বিক বাজারে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, যা দুবাইতেও কার্যকর রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এই খাতে বিনিয়োগ করলে উভয় দেশই উপকৃত হবে।
রাষ্ট্রদূত উভয় দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যেকোনো বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে বিনিয়োগ প্রস্তাবনা চেয়ে নেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিক, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।